ধানের জাত নির্বাচন
জমি, মৌসুম, পরিবেশ ও শস্যক্রম বিবেচনায় রেখে উপযুক্ত ধানের জাত নির্বাচন করা উচিত।
উফশী ও আধুনিক ধান বলিতে যা বুঝায়
• যে ধান গাছের সার গ্রহণ ক্ষমতা অধিক এবং ফলন বেশি তাকেই উফশী ধান বলা হয়। উফশী ধানের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল ধান পেকে গেলেও গাছ সবুজ থাকে। উফশী ধানের প্রয়োজনীয় বিশেষ গুণ, যেমন স্বল্প জীবনকাল এবং রোগবালাই, খরা, লবণাক্ততা ও জলমগ্নতা ইত্যাদি সহনশীলতা সংযোজিত হয় তখন তাকে আধুনিক ধান বলা হয়। তাই সকল উফশী ধান আধুনিক নয় কিন্তু সকল আধুনিক ধানে উফশী গুণ বিদ্যমান।
আউশ মৌসুমে যেসব উফশী ধানের চাষ করা যায়
• আউশ মৌসুম: এ মৌসুমে বপন ও রোপন দু’ভাবেই ধান আবাদ করা যায়। আউশ ধানের বীজ বপনের উপযুক্ত সময় হল ১৫-৩০ চৈত্র।
১।বোনা আউশের উফশী জাতগুলো হল বিআর২১, বিআর২৪, ব্রি ধান২৭, ব্রি ধান৪২ এবং ব্রি ধান৪৩।
২।রোপা আউশের জাতগুলো হল বিআর২৬, ব্রি ধান২৭, ব্রি ধান৪৮ এবং ব্রি ধান৫৫।
আমন মৌসুমে যেসব জাতগুলো চাষ করা যায়
• রোপা আমন ধানের জাতগুলোর মধ্যে আলোক-সংবেদনশীলতা ও জাত নির্বাচন বিবেচনা করা জরুরী।
১।সুগন্ধি পোলাও ও বিরিয়ানির চালের জন্য বিআর৫, ব্রি ধান৩৪, ব্রি ধান৩৭ এবং ব্রি ধান৩৮ অন্যতম।
২। অধিক ফলনশীল মাঝারি মোটা থেকে মোটা চালের জন্য বিআর১০, বিআর১১, ব্রি ধান৩০ ও ব্রি ধান৩১ চাষ করতে হবে।
৩। আগাম জাত হিসাবে বিআর২৫, ব্রি ধান৩২, ব্রি ধান৩৩, ব্রি ধান৩৯ ও ব্রি ধান৪৯ এবং বিনাধান৭ অত্যন্ত উপযোগী।
৪।বন্যামুক্ত এলাকায় উফশী ব্রি হাইব্রিড ধান৪-এর চাষ করা যেতে পারে।
৫।জলমগ্নতা-সহনীয় জাত হিসাবে ব্রি ধান৫১ ও ব্রি ধান৫২-এর চাষ করা যেতে পারে।
৬। মাঝারি মোটা থেকে লম্বা মোটা চাল এবং নাবি জাত হিসাবে বিআর২২, বিআর২৩ এবং ব্রি ধান৪৬-এর চাষ করা যেতে পারে।
৭। লবণাক্ততা-সহনশীল জাত হিসাবে ব্রি ধান৪০, ব্রি ধান৪১, ব্রি ধান৫৩, ব্রি ধান৫৪, বিনাধান৮ ও বিনাধান১০ সবচেয়ে উপযুক্ত জাত।
৮।মোটা চাল এবং জোয়ার-ভাটা পরিবেশের ধান হিসাবে ব্রি ধান৪৪ উপযুক্ত।
বোরো মৌসুমে উফশী ধান কোনগুলো?
বোরো মৌসুমের জাতগুলোতে কোন আলোক-সংবেদনশীলতা নেই। এ মৌসুম শুরু হয় ঠান্ডা ও ছোট দিন দিয়ে, আর ফুল ফোঁটে গরমের শুরুতে এবং বড় দিনে । তাই আলোক-সংবেদনশীল কোন জাত বোরো মৌসুমে আবাদযোগ্য নয়।
১। বোরো মৌসুমে চাষাবাদ উপযোগী আগাম জাতগুলো হল বিআর১, বিআর৬, ব্রি ধান২৮, ব্রি ধান৪৫ এবং ব্রি ধান৫৫।
২।উফশী ও দীর্ঘ জীবনকাল বোরো মৌসুমে চাষযোগ্য জাতগুলোর মধ্যে বিআর১৪, বিআর১৬, ব্রি ধান২৯, ব্রি ধান৫৯, ব্রি ধান৬০ এবং ব্রি হাইব্রিড ধান১ অন্যতম।
জাত নির্বাচন নিয়ে কিছু প্রশ্ন?
১।ব্রি ধান২৮-এর পরিবর্তে আগাম কোন জাতের ধান চাষ করা যায়?
• ব্রি হাইব্রিড ধান২ এবং ব্রি হাইব্রিড ধান৩-এর চাষ করে অধিক ফলন পাওয়া যায়।
২। ঠান্ডা-সহনীয় ও আগাম জাত কোনটি?
• ব্রি ধান৩৬।
৩। হাওর এলাকার উপযোগী ধানের জাত কোনগুলো?
• বিআর১৭, বিআর১৮ এবং বিআর১৯।
৪। শিলাবৃষ্টি-প্রবণ এলাকার উপযোগী জাত কোনটি?
• বিআর৮ এবং বিআর৯।
৫। লবণাক্ততা-সহনশীল জাত কোনগুলো?
• ব্রি ধান৪৭, ব্রি ধান৬১, ব্রি ধান৮ এবং বিনাধান১০।
৬। উফশী ধানের মধ্যে সুগন্ধি ধান কোনটি?
• ব্রি ধান৫০ (বাংলামতি)।
৭। মধ্যম মানের লবণাক্ততা, খরা এবং ঠান্ডা সহনশীল জাত কোনটি?
•ব্রি ধান৫৫।
৮। উর্বর জমি ও পানি ঘাটতি নেই এমন সব এলাকার জন্য অধিক ফলনশীল জাত হিসাবে কোন কোন ধানের চাষ করলে বেশি লাভবান হওয়া যাবে?
•ব্রি ধান৫৮ যার জীবনকাল ব্রি ধান২৮ এর চেয়ে ৬-৭ দিন বেশি। এটি নাবি কিন্তু ব্রি ধান২৯ এর চেয়ে ৭-৮ দিন আগে পাঁকে।
ব্রি ধান গুলোর লোকাল নাম এবং যে কারনে তারা বেশি পরিচিত তার বৈশিষ্ট্যঃ
বিআর ১ : বোরো ও আউশ মৌসুমে আবাদযোগ্য এ ধানের জনপ্রিয় নাম চান্দিনা । কোন কোন অঞ্চলে এ ধান ৫৩২ আবার কোথাও কেবল ৭৬ নামে পরিচিত । চান্দিনা একটি আগাম জাত ।
বিআর ২ : এ ধানের জনপ্রিয় নাম মালা । এ ধানের মুড়ি খুব ভাল হয়। মালা বোরো এবং রোপা আউশের একটি জাত।
বিআর ৩ : এ ধানের জনপ্রিয় নাম বিপ্লব। এটি নাবী জাত হলেও বোরো মৌসুমে ফলনের জন্য সুখ্যাত। জাত রোপা আউস এবং রোপা আমন মৌসুমেও ভাল ফলন দেয়।
বিআর ৪ : এ ধানের জনপ্রিয় নাম ব্রিশাইল। এটি একটি আলোক-সংবেদনশীল জাত। তাই কেবল রোপা আমন মৌসুমে চাষাবাদ করার জন্য উপযোগী। এ ধানের বীজ বপনের সবচেয়ে ভাল সময় হলো আষাঢ় মাস। এ সময় বীজ বপন করলে শ্রাবণের মাঝামাঝি থেকে শেষ পর্যন্ত সময়ে চারা রোপণ করা যায়। কার্তিকের দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় সপ্তাহে ফুল ফোটে। অগ্রহায়ণের দ্বিতীয় ও তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে ধান পাকে।
বিআর ৫ : আমন মৌসুমের এ ধানের জনপ্রিয়তা নাম দুলাভোগ। এর চালের কালিজিরা চালের মতো সুগন্ধ আছে বলে পোলাও এবং পায়েশ তৈরির জন্য খুবই উপোযোগী। এটি আলোক- সংবেদনশীল, তাই এর চাষাবাদ রোপা আমন মৌসুমের জন্য নির্ধারিত।
বিআর ৬ : বোরো ও আউশ মৌসুমের জাত। ব্রি এ ধানটি ইরি থেকে সংগ্রহ করে এবং বিভিন্ন মৌসুমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে আশানুরুপ ফলন পাওয়ায় বিআর ৬ নামে অনুমোদন পায়। এটি একটি আগাম জাত।
বিআর ৭ : ঝড়-ঝঞ্ঝা কম হয় এমন অঞ্চলে এ ধান রোপা আউশ ও বোরো মৌসুমের জন্য উপযোগী। কারণ ধান বেশি পেকে গেলে ঝড়ে পড়ার প্রবণতা দেখা দেয়। তাই এ ধান পাকার সাথে সাথে কর্তন করতে হবে। এর চালের আকার প্রায় বাসমতির মতো, তবে এতে সুগন্ধি নেই।
বিআর ৮ : এ জাতের জনপ্রিয় নাম আশা। বোরো এবং আউশ মৌসুমের এ জাত ধান শীষের সাথে শক্তভাব লেগে থাকে । তাই ঝড়-ঝঞ্ঝা এবং শিলা বৃষ্টি-প্রবণ এলাকার জন্য এ ধান বিশেষ উপযোগী।
বিআর ৯ : বোরো ও আউশ মৌসুমে চাষের উপযোগী। বিআর ৯ এর জনপ্রিয় নাম সুফলা। এ জাতে ধান শীষের সাথে শক্তভাবে লেগে থাকে তবে আশা ধানের চেয়ে মজবুতি কিছু কম। এ জাত শিলাবৃষ্টি-প্রবণ এলাকার জন্য খুবই উপযোগী।
বিআর ১০: এ ধানের জনপ্রিয় নাম প্রগতি। এজাতটি সহজে চেনা যায। কারণ ফুল ফোটার সময় শীষগুলো ডিগপাতার নিচে থাকে এবং ডিগপাতার শেষ প্রান- হঠাৎ করেই সুচালো। প্রগতিকে রোপা আমনের নাবী জাতের তালিকায় ফেলা যায়। জাতটিতে আলোক-সংবেদনশীলতা আছে। এ কারণে রোপণের জন্য ৪০-৫০ দিনের চারা ব্যবহার করা যায়। তখন চারা বেশ লম্বা হয় এবং হাঁটু পানিতে সহজেই রোপণ করা যায়। এ সব সুবিধার জন্য খুলনার লবণাক্ত এলাকায় রোপা আমন মৌসুমে জাতটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ জাতের লবণাক্ত সহনশীলতা নেই, কিন' রোপা আমনে লবণাক্ত অঞ্চলে ক্ষেতে ২০-৩০ সেমি: গভীর পানি থাকায় লবণাক্ত মাত্রা ধানের ক্ষতিকারক পর্যায় (৪ডিএস/মিটার) এর নিচে থাকে। স্বল্প আলোক সংবেদনশীলতার জন্য এ জাত জ্যৈষ্ঠের ২০-২৫ তারিখে বপন করলে কার্তিকের মাঝামাঝি সময়ে ফসল কর্তন করা যায়। ফলে ঐ জমিতে সময় মতো গম, ডাল ও তেল ফসল আবাদ করা যায়।
বিআর ১১ : এধানের জনপ্রিয় নাম মুক্তা। এ ধানের ফুল ফোটার সময় শীষ ডিগপাতার উপরে থাকে এবং সহজেই দৃষ্টি কাড়ে। আমন মৌসুমের এ জাতটি সারা দেশে জনপ্রিয়। মুক্তা ধান স্বল্প আলোক সংবেদনশীলতাবিশিষ্ট। স্বল্প আলোক সংবেদনশীলতার জন্য এ জাত জ্যৈষ্ঠের ২০-২৫ তারিখে বপন করলে কার্তিকের মাঝামাঝি সময়ে ফসল কাটা যায়; ফলে ঐ জমিতে সময়মতো গম, ডাল ও তেল ফসল আবাদ করা যায়।
বিআর ১২ : বোরো ও আউশ মৌসুমের এ ধানের জনপ্রিয় নাম ময়না। এ ধানের গাছের নিচের অংশে বেগুনী রঙ দেখে জাতটি সহজে চেনা যায়। এ জাতটি দেশের যে সকল অঞ্চলে আগাম রোপা আউশ হয় ঐ সব এলাকার জন্য খুবই ভাল জাত।
বিআর ১৪ : এর জনপ্রিয় নাম গাজী। বোরো ও আউশ মৌসুমের এ জাত ছড়া বের হবার পর ডিগপাতা কিছুটা হেলে যায়; ফলে শীষ উপরে দেখা যায় এবং দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ছড়ার উপরি ভাগের ধানে হেলে শুঙ আছে। ধানের গাছ বেশ উঁচু এবং খুব মজবুত, তাই ধান পাকার সময় মাঠ কোমর সমান পানিতে তলিয়ে যায় না। এ জন্যে দেশের বিল অঞ্চলে বোরো মৌসুমে এটি খুবই জনপ্রিয়।
বিআর ১৫ : বোরো ও আউশ মৌসুমে চাষাবাদের জন্য বিআর ১৫ নামে অনুমোদন লাভ করে। এর জনপ্রিয় নাম মোহিনী । এ জাতের চাল প্রায় স্থানীয় শানীয় ধানের মতো, কিন' এটি নাবী জাত।
বিআর ১৬ : বোরো ও আউশ মৌসুমের এ ধানের জনপ্রিয় নাম শাহীবালাম। এ ধানের চাল পুরানো আমলের বালাম সমমানের এবং বর্তমানে মুড়ি তৈরি জন্য খ্যাতি লাভ করেছে।
বিআর ১৭ : ব্রি এ জাতটিকে হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ হাওড় এলাকার উপযোগী বলে চূড়ান্ত ভাবে নির্বাচন করে বোরো মৌসুমে চাষের জন্য এ জাতটি অনুমোদন লাভ করে। এ ধানের জনপ্রিয় নাম হাসি । এ জাতের গাছ বেশ উঁচু ও কান্ড শক্ত। ফুল ফোটার সময় এ ধানের শীষগুলো ডিগপাতার উপরে থাকে বলে সহজেই দৃষ্টি অকর্ষণ করে এবং জাতটির জীবনকাল মাধ্যম মেয়াদী।
বিআর ১৮ : ব্রি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর করে হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ হাওড় এলাকার উপযোগী বলে চূড়ান্ত ভাবে নির্বাচন করে। বোরো ও মৌসুমে এ জাতটি বিআর ১৮ নামে অনুমোদন লাভ করে। এ ধানের জনপ্রিয় নাম শাহজালাল। এ জাতের গাছ বেশ উঁচু ও কান্ড মজবুত এবং নাবী।
বিআর ১৯ : জাতটি ধান পরীক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে ব্রি-তে আসে এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষায় এটি হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ হাওড় এলাকার উপযোগী বলে চূড়ান্ত ভাবে নির্বাচন করা হয। বোরো মৌসুমের এ জাতটি বিআর ১৯ নামে অনুমোদন লাভ করে। এ ধানের জনপ্রিয় নাম মঙ্গল। এর ডিগপাতা ছোট এবং কান্ডের সাথে আড়াআড়িভাবে অবস্থান করে। ফুল ফোটার সময় শীষ উপরে থাকে এবং দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এ জাতের গাছ বেশ উঁচু এবং ধান পাকা পর্যন- খাড়া থাকে এবং নাবী।
বিআর ২০ : এ ধানের জনপ্রিয় নাম নিজামী। এ জাতের ধানে অনেক সময় দাগ দেখা যায় । জাতটি ছিটিয়ে, লাইন করে এবং ডিবলিং করা যায়। বোনা আউশের এ জাতটি দেশের বৃষ্টিবহুল অঞ্চলে, বিশেষ করে বৃহত্তর সিলেট, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও ময়মনসিংহ জেলার জন্য উপযোগী।
বিআর ২১ : এ ধানের জনপ্রিয় নাম নিয়ামত। জাতটি ছিটিয়ে,লাইন করে এবং ডিবলিং পদ্ধতিতে বোনা যেতে পারে। বোনা আউশের এ জাতটি দেশের বৃষ্টিবহুল অঞ্চলে, বিশেষ করে বৃহত্তর সিলেট, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও ময়মনসিংহ জেলার জন্য উপযোগী।
বিআর ২২ : আমন মৌসুমের উপযোগী। এ ধানের নাম কিরণ। এটি একটি আলোক সংবেদনশীল নাবী জাত। ঠিক নাইজারশইলের মতো। এর চাল আর নাইজারশাইলের মধ্যে পার্থক্য নেই বললেই চলে; আবার ফলনও হয় দ্বিগুণ। দেশের বন্যাপ্রবণ এলাকায় বন্যা পরবর্তী সময়ে যে জমিতে যেভাবে নাইজারশাইলের চারা রোপণ করা হয় সে সময়ে ওই জমিতে একই নিয়মে কিরণ রোপণ করা যাবে। কিরণে প্রতি হেক্টর ১ টন ফলনও বেশি পাওয়া যাবে। রোপণের পর কিছু পরিচর্যা, যেমন জমিতে পানি সংরক্ষণ ও পরিমাণ মতো নাইট্রোজেন সার প্রয়োগ করতে হয়। জোয়ার-ভাটা অঞ্চলে কিরণ ধানের ৪০-৫০ দিনের চারা ১-১৫ আশ্বিন পর্যন- রোপণ করা যায়। ১৫ আশ্বিনের পর এ ধান রোপণ করা উচিত নয়।