ফ্লোটিং গার্ডেন: জলমগ্ন এলাকায় কৃষির অনন্য সমাধান
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল ও জলাবদ্ধ এলাকায় অনেক কৃষকই বর্ষাকালে জমি চাষ করতে পারেন না। বছরের কয়েক মাস পানি জমে থাকায় চাষাবাদ বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু “ভাসমান শয্যা” বা ফ্লোটিং গার্ডেন পদ্ধতি সেই সমস্যার সমাধান এনে দিয়েছে।
ফ্লোটিং গার্ডেন কী?
ফ্লোটিং গার্ডেন হচ্ছে পানির ওপর ভাসমান একটি কৃত্রিম শয্যা, যেখানে মাটি বা গোবরের পরিবর্তে জলজ উদ্ভিদের পচা গাদ ব্যবহার করা হয়। এই শয্যার ওপর বীজ বপন করে সবজি, মশলা কিংবা ফুল চাষ করা সম্ভব।
কীভাবে তৈরি হয় ভাসমান শয্যা?
উপকরণ সংগ্রহ: পানিফল, কচুরিপানা বা জলজ উদ্ভিদ
শয্যা তৈরি: ১৫-২০ ফুট লম্বা ও ৩-৪ ফুট চওড়া করে উদ্ভিদের স্তূপ বানানো
সার মিশ্রণ: গাদা শুকিয়ে গেলে তার ওপর গোবর সার বা জৈব সার মেশানো
বীজ বপন: সবজি বা ধানের বীজ ছিটিয়ে দেওয়া
রক্ষণাবেক্ষণ: নিয়মিত পানি ছিটানো ও আগাছা পরিষ্কার করা
কোন ফসল ভালো হয়?
লাউ
শসা
করলা
ঢেঁড়স
মরিচ
ধনেপাতা
সুবিধা
জলাবদ্ধ জমিতেও চাষ সম্ভব
মাটি ক্ষয় হয় না
রাসায়নিক সার কম লাগে
সারা বছর চাষের সুযোগ
অর্থনৈতিক গুরুত্ব
FAO এর তথ্য অনুযায়ী, ফ্লোটিং গার্ডেন পদ্ধতিতে এক মৌসুমে জমির তুলনায় প্রায় ২৫-৩০% বেশি ফলন পাওয়া যায়। ফলে কৃষকরা বর্ষাকালেও আয় করতে পারেন।
শেষ কথা
জলবায়ু পরিবর্তন ও নদীভাঙনের মতো সমস্যায় আক্রান্ত এলাকায় ফ্লোটিং গার্ডেন শুধু কৃষির সমাধানই নয়, বরং গ্রামীণ অর্থনীতিকে সচল রাখার একটি কার্যকর পদ্ধতি।